সন্তানের লালন-পালন (প্রথম কিস্তি)
অপূর্ব সম্ভাষণ
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قُوْۤا اَنْفُسَكُمْ وَ اَهْلِیْكُمْ نَارًا وَّ قُوْدُهَا النَّاسُ وَ الْحِجَارَۃُ عَلَیْهَا مَلٰٓئِکَۃٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعْصُوْنَ اللهَ مَاۤ اَمَرَهُمْ وَ یَفْعَلُوْنَ مَا یُؤْمَرُوْنَ
তেলাওয়াতকৃত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সকল মুসলমানকে সম্বোধন করেছেন। সম্বোধনকালে বলেছেন : یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا কুরআন শরীফের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তাআলা یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا বাক্য ব্যবহার করেছেন এবং এর মাধ্যমে মুসলমানদেরকে সম্বোধন করেছেন। এ প্রসঙ্গে ডা. আবদুল হাই (রহ.) বলতেন : আল্লাহর সম্বোধন মুসলমানদের জন্য یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا এর মাধ্যমে স্নেহ ও ভালোবাসা ঝরে পড়েছে। কারণ, সম্বোধনের দুটি নিয়ম আছে। এক. সম্বোধিত ব্যক্তির নাম ধরে ডাকা। দুই. আত্মীয়তার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে সম্বোধন করা। যেমন, পিতা পুত্রকে ডাকার সময় নাম ধরে ডাকে অথবা শুধু ‘বেটা বলে ডাকে। বেটা বলে ডাকার মধ্যে যে স্নেহ ও ভালোবাসা রয়েছে এবং তা শ্রবণে যে মাধুর্য রয়েছে, নাম ধরে ডাকার মধ্যে সেই স্নেহের ছোঁয়া এবং ভালোবাসার স্পর্শ নেই।
‘বেটা’ শব্দ স্নেহের শব্দ
শায়খুল ইসলাম হযরত শাব্বীর আহমদ উসমানী (রহ.) গভীর জ্ঞান ও গবেষণার অধিকারী ছিলেন। শুধু পাকিস্তানেই নয়; বরং গোটা বিশ্বে তাঁর মতো আলিম ও গবেষক সমকালে সম্ভবত ছিলো না। তাই কেউ তাঁকে ‘শায়খুল ইসলাম’ বলে সম্বোধন করতেন, কেউ ‘আল্লামা’ বলে ডাকতেন। আল্লামা ত্বাকী উসামনী (রহ.) বলেন, আমার দাদী যখন জীবিত ছিলেন, তখন হযরত শাব্বীর আহমদ উসমানী (রহ.) মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে আসতেন। কারণ পৃথিবীর বুকে তাঁকে ‘বেটা’ বলে ডাকার মতো আমার দাদী ছাড়া আর কেউ জীবিত ছিলো না। এ শব্দটি শোনার জন্যই তিনি দাদীর নিকট ছুটে আসতেন। বেটা শব্দ শোনার মধ্যে যে পুলক রয়েছে, তার সামান্যতম ঝলকও অন্য কোনো শব্দের মাঝে নেই।
আসলে মানুষের এমন মুহূর্তও আসে, যখন ‘বেটা’ শব্দ শোনার জন্য মন উতলা হয়ে ওঠে। ডা. আবদুল হাই (রহ.) বলেছেন : আল্লাহ তাআলা ঈমানদারকে স্নেহপূর্ণ শব্দে সম্বোধন করেছেন। তিনি সম্পর্কের সূত্র ধরে ডাক দিয়েছেন। হযরত শাব্বীর আহমদ উসমানী (রহ.) ‘হে ঈমানদারগণ!’ এটা ঠিক পিতার সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেছেন :
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قُوْۤا اَنْفُسَكُمْ وَ اَهْلِیْكُمْ نَارًا وَّ قُوْدُهَا النَّاسُ وَ الْحِجَارَۃُ عَلَیْهَا مَلٰٓئِکَۃٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعْصُوْنَ اللهَ مَاۤ اَمَرَهُمْ وَ یَفْعَلُوْنَ مَا یُؤْمَرُوْنَ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিবার-পরিজনকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণহৃদয় ও কঠোরস্বভাবে ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা আদেশ করা হয় তা-ই পালন করে।” [সূরা তাহরীম : ৬]
No comments