সন্তানের লালন-পালন (পঞ্চম কিস্তি)

বর্তমানের ছেলে-মেয়েরা পিতা-মাতার মাথায় সওয়ার

আল্লাহ তাআলার একটা নীতি আছে, যার বর্ণনা হাদীস শরীফে প্রদান করা হয়েছে। যে ব্যক্তি মাখলুকের সন্তুষ্টির জন্য আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে, আল্লাহ তাআলা ওই মাখলুককে তার উপর চড়াও করে দেন। যেমন, আজকাল তা-ই হচ্ছে। পিতা-মাতা সন্তানকে খুশি করে। তার আয়-রুজি ও সামাজিক উন্নতির কথা চিন্তা করে। এসব কিছু করতে গিয়ে আল্লাহকে নারাজ করে। অবশেষে ফল মিলে, ওই সন্তানই পিতা-মাতার মাথার উপরে উঠে বসে। পিতা-মাতা বার্ধক্যে উপনীত হলে ওই সন্তানই তাদের নার্সিংহোমে রেখে আসে। ওখানে পিতা-মাতার জীবন কেমন কাটে, তার খোঁজ-খবরও সন্তান নেয় না।

পিতা-মাতা নার্সিংহোমে

এমন অনেক ঘটনা পশ্চিমাদের দেশে আছে যে, বৃদ্ধ পিতা নার্সিংহোমে পড়ে থাকে। এমনই এক পিতা নার্সিংহোমে মারা গেছে। ম্যানেজার ছেলের কাছে ফোন করেছে, আপনার পিতা মারা গেছে, তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করুন। ছেলে উত্তর দিলো, পিতার মৃত্যুতে আমি আন্তরিকভাবে শোকাহত। কিন্তু দয়া করে আপনি তার কাফন-দাফনের কাজটা সেরে ফেলুন। আমি এসে বিল পরিশোধ করে দেবো।
করাচির নার্সিহোমেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। ছেলেকে মৃত্যুসংবাদ জানানো হলে সে প্রথমে আসার ওয়াদা দিয়েছিলে। কিন্তু পরবর্তিতে কাফন-দাফনের ব্যবস্থা না করে বললো : জরুরি মিটিং আছে, বিধায় আসতে পারবো না।
গভীরভাবে ভাবুন, এই সেই সন্তান, যাকে খুশি করার জন্য আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করা হয়েছে।

সন্তানের প্রতি ইয়াকুব (আ.)-এর উপদেশ

মৃত্যুর সময় সাধারণত মানুষ ছেলে-মেয়েদের একত্র করে। উদ্দেশ্য, তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে, আমার মৃত্যুর পর তোমাদের কী হবে? তোমরা কীভাবে আয়-রোজগার করবে? হযরত ইয়াকুব (আ.)-ও মৃত্যুর সময়ে তাঁর সন্তানদের একত্রিত করলেন। কিন্তু তিনি তাদের কাছে আয়-রোজগারের কথা জিজ্ঞেস করেন নি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : ‘বল, আমার মৃত্যুর পর তোমরা কার ইবাদত করবে?’ বোঝা গেলো, সন্তান ও পরিবার-পরিজনের জন্য এ ধরনের চিন্তা-ই করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.