সন্তানের লালন-পালন (দ্বিতীয় কিস্তি)

আমল-ই নিজের মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়

يا ايها الذين امنوا قوا انفسكم واهليكم نارا وقودها الناس والحجارة عليها ملائكة غلاظ شداد لا يعصون الله ما امرهم ويفعلون ما يؤمرون
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিবার-পরিজনকে  সেই আগুন থেকে রক্ষা করো যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণহৃদয় ও কঠোরস্বভাবের ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা আদেশ করা হয় তা-ই পালন করে।” [সূরা তাহরীম : ৬]
আয়াতটিতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন : কেবল নিজেকে আগুন থেকে বাঁচালাম আর নিশ্চিন্তে বসে থাকলাম, এতটুকুই যথেষ্ট নয়। বরং পরিবার-পরিজনকেও আগুন থেকে বাঁচাতে হবে। বর্তমানে আমরা দেখি, মানুষ নিজে খুব ধার্মিক, নামাযের গুরুত্ব দেয়, যাকাত আদায় করে, আল্লাহর রাস্তার অর্থ-সম্পদ খরচ করে এবং শরীয়তের সমূহ বিধি-বিধানের উপর আমর করার চেষ্টা করে; অথচ তার স্ত্রী-সন্তানের প্রতি তাকালে মনে হয় পূর্ব-পশ্চিম পরিমাণ ব্যবধান। সে এক পথে, তারা অন্য পথে। স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফরয-ওয়াজিবের তোয়াক্কা নেই, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার ফিকির নেই। তারা গুনাহর জোয়ারে ভাসছে। অথচ সেই ধার্মিক (?) আত্মতৃপ্তিসহ বসে আছে। মনে করে, আমি তো মসজিদের প্রথম কাতারে শামিল হই, জামাতে নামায আদায় করি! অথচ পরিবার-পরিজনকে দোযখের আগুন থেকে বাঁচানোর ব্যাকুলতা নেই। সুতরাং এমন ব্যক্তিরও মুক্তি নেই। এ ব্যক্তি আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা পাবে না। শুধু নিজের কৈফিয়ত দিয়ে পার পাবে না, বরং স্ত্রী-সন্তানেরও কৈফিয়ত দিতে হবে। কারণ, তাদেরকে রক্ষা করারও দায়িত্ব ছিলো তার। সুতরাং কিয়ামতের দিন সেও পাকড়াও হবে এবং জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবে।
এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :
اَلَا كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُوْلٌ عَنْ رَعْيَتِه
“তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর প্রত্যেকেই যার যার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”
অতএব আমাদের সকলের উচিত নিজে আমল করার সাথে সাথে পরিবার-পরিজনকেও আমলের প্রতি উদ্ভুদ্ধ করা।যাতে তারাও মুক্তি পেয়ে যায়।

No comments

Powered by Blogger.